শনিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০১৫

বিদআত পর্বঃ- ১ । সুন্নাত কাকে বলে ? বিদআত কাকে বলে ? বিদআতের হুকুম কি ?

সমাজে প্রচলিত বিদাআত নিয়ে আজকে থেকেই লিখা শুরু করে দিলাম ।

আমাদের সমাজে অনেক কিছুই প্রচলন আছে যা ইসলামিক দৃষ্টি কোন থেকে বিদাআত ।
আমি সেই সমস্ত বিদআত নিয়েই ইনশাআল্লাহ্‌ আস্তে আস্তে পোস্ট লিখে যাব ।
আজকে আমাদের সর্ব প্রথম বিদাআত সম্পর্কে বেসিক কিছু বিষয় জেনে নিতে হবে যে,

একঃ- সুন্নাত কাকে বলে ?
দুইঃ- শরীয়তের ভাষায় বিদাআত কাকে বলে ?
তিনঃ- বিদাআতি ব্যাক্তির শাস্তি কি ?
পোস্টটি কপি করা সম্পূর্ণ নিষেধ
সুন্নাত কাকে বলে ?
______________

মুসলিম বিশ্বের খ্যাতনামা আলেম শায়খ মোস্তফা সাবায়ী (রহঃ) বলেন,
আরবি অভিধানে সুন্নাত অর্থ কর্ম পন্থা বা কর্ম পদ্ধতি ।
চাই তা ভালো হোক বা মন্দ ।
পক্ষান্তরে পরিভাষায় সুন্নাতের একাধিক ব্যাক্ষা রইয়েছে ।

হাদিস শাস্ত্রবিদ্গনের পরিভাষায় হুজুর সাঃ এর কথা, কর্ম ও সম্মতি এবং তার শারিরিক বৈশিষ্ট্য, স্বভাব ও চাল চরিত্রকে সুন্নাত বলা হয় ।

উসুল শাস্ত্রবিদ্গনের মতে সুন্নাত বলা হয় প্রত্যকে কথা, কর্ম ও সম্মতিকে, যা হুজুর সাঃ এর সাথে সম্পৃক্ত এবং যার থেকে শরীয়তের কোন না কোন হুকুম প্রমানিত হয় ।

মুহাদ্দিসগনের মতে এবং অনেক সময় ফিকাহ শাস্ত্রবিদ্গনের মতে সুন্নাত বলা হয় ঐ সব কর্মকে যা শরিয়তের কোন দলিল কিংবা উসূলে শরীয়তের কোন আসল দ্বারা দ্বীনের অন্তর্ভুক্ত বলে প্রমানিত ।
দেখুনঃ- আচ্ছুন্নাতু ওয়া মাকানাতুহা, খন্ড-১, পৃষ্ঠা ৯০-৯৩ ।

শরীয়তের ভাষায় বিদাআত কাকে বলে ?
_______________________________
ইমাম শাতেবী রহঃ শরীয়তের দৃষ্টিতে বিদআতের ব্যাখ্যা দেন এভাবেঃ-
“দ্বীনের মধ্যে এমন নব উদ্ভাবিত পন্থাকে বিদআত বলা হয়, যা দৃশ্যতঃ শরীয়তের কাজ বলে মনে হয় এবং আল্লাহ্‌র অধিক ইবাদতের নিয়তে করা হয়” ।
দেখুনঃ- আল-ইতিছাম, খন্ড-১, পৃষ্ঠা ৩৭ ।

বুখারি শরিফের ভাষ্যকর হাফেজুল হাদিস আল্লামা ইবনে হাজার আছকালানী রহঃ বলেনঃ- বিদআত মূলত এমন নব আবিস্কার বস্তু যার কোন দৃষ্টান্ত পূর্ববর্তী যুগে নেই । আর শরীয়তের পরিভাষায় সুন্নতের পরিপন্থী কাজকে বিদআত বলা হয় ।
দেখুনঃ- ফতহুল বারী খন্ড-৪, পৃষ্ঠা ২১৯

বিদাআত এর হুকুম কি ?
_______________________

আল্লাহ্‌ তাঃ বলেন

قُلْ يَا أَهْلَ الْكِتَابِ لَا تَغْلُوا فِي دِينِكُمْ غَيْرَ الْحَقِّ وَلَا تَتَّبِعُوا أَهْوَاءَ قَوْمٍ قَدْ ضَلُّوا مِنْ قَبْلُ وَأَضَلُّوا كَثِيرًا وَضَلُّوا عَنْ سَوَاءِ السَّبِيلِ


বলুনঃ হে আহলে কিতাবগন, তোমরা স্বীয় ধর্মে অন্যায় বাড়াবাড়ি করো না এবং এতে ঐ সম্প্রদায়ের প্রবৃত্তির অনুসরণ করো না, যারা পূর্বে পথভ্রষ্ট হয়েছে এবং অনেককে পথভ্রষ্ট করেছে। তারা সরল পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়েছে।
দেখুনঃ- সূরা মায়েদা, আয়াত ৭৭ ।

عن حذيفة قال قال رسول الله صلي الله عليه و سلم لا يقبل الله لصاحب بدعت صوما ولا صلاة ولا صدقة ولا حجا ولا عمرة ولا جهادا ولا صرفا ولا عدلا  يخرج من الاسلام كما تخرج ِلشعرة من العجين


আল্লাহ্‌ তাঃ কবুল করেন না কোন বিদআতির রোজা, নামা, জাকাত, হজ্জ, ওমরা, জিহাদ, সমাজ সেবা, দান । তারা এমন ভাবে দ্বীন থেকে বের হয়ে যায় যেমন খামির থেকে চুলকে টেনে বের করা হয় । অর্থাৎ এমন ভাবে ইসলাম থেকে বের হয়ে যায় যে, সে টেরিই পায় না ।
দেখুনঃ- ইবনে মাজাহ, পৃষ্ট ৬।

عن معاذ بن جبل قال قال رسول الله صلي الله عليه و سلم من مشي الي صاحب بدعت ليوقره فقد اعان علي هدم الاسلام


যে ব্যাক্তি কোন বিদআতির সম্মানার্থে তার নিকটে যায় ঐ ব্যাক্তি যেন ইসলামকে ধ্বংস করতে সাহায্য করল ।
দেখুনঃ- আল-বালাগ, পৃষ্ঠা ৫, আল ই’ তিছাম, খন্ড ১, পৃষ্ঠা ৮৪

আজকে এই পর্যন্তই । একবার ভালো করে সব কিছু পড়ে নিন । এবং মাথায় সাজিয়ে রাখুন । আগামিতে কাজে লাগবে ইনশাআল্লাহ্‌ ।

লিখেছেনঃ- আশরাফুল আলোম
এডমিনঃ- asunjani.Com
লেখক:-  টেকটিউনস, নাইয়রি, আসুন জানি ডট কম ।
Mail:- ashrafulalomroni@gmail.com

0 comments: