রবিবার, ৪ জানুয়ারী, ২০১৫

বাংলায় সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন - প্রথম পর্ব [সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন কি?]

Search Engine Optimization Bangla Tutorial
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO) হচ্ছে এমন এক ধরনের পদ্ধতি যা মাধ্যমে একটি ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিনের কাছে গুরুত্বপূর্ণ করে তোলা, যাতে একটি নিদির্ষ্ট বিষয়ের সার্চ রেজাল্টে ওয়েব সাইটটি অন্য সাইটকে পেছনে ফেলে সবার আগে প্রদর্শিত হতে পারে। এই ধরনের সার্চ রেজাল্টকে অর্গানিক (Organic) বা ন্যাচালার (Natural) সার্চ রেজাল্ট বল হয়। সার্চ রেজাল্টের প্রথম পৃষ্টায় দশটি ওয়েব সাইটের মধ্যে নিজের ওয়েবসাইটকে নিয়ে আসাই সবার লক্ষ্য।


এর কারণ হিসেবে দেখা যায় ব্যবহারকারীরা সাধারণত শীর্ষ দশের মধ্যে তার কাঙ্ক্ষিত ওয়েবসাইটকে না পেলে দ্বিতীয় পাতায় না গিয়ে অন্য কোন শব্দ ব্যবহার করে পুনরায় সার্চ করেন। শীর্ষ দশে থাকার মানে হচ্ছে ওয়েবসাইটে বেশী সংখ্যকভিজিটর পাওয়া আর বেশী সংখ্যক ভিজিটর মানে হচ্ছে বেশী আয় করা। এজন্য সবাই মরিয়া হয়ে নিজের ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিনের জন্য উপযুক্ত করে তুলেন।

সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের সাথে অনেক বিষয় জড়িত। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। এক্ষেত্রে প্রথমেই সাইটের জন্য এক বা একাধিক নির্দিষ্ট কি-ওয়ার্ড (Keyword) বা শব্দগুচ্ছ বাছাই করতে হয়। কিওয়ার্ড বাছাই করার পূর্বে সময় নিয়ে গবেষণা করা প্রয়োজন। এমন একটি কিওয়ার্ড বাছাই করতে হয় যাতে এর প্রতিদন্ধী কম থাকে। ধরা যাক অনলাইনে গেম খেলার একটি সাইটের জন্য যদি "Play Online Game" কিওয়ার্ড বাছাই করা হয়, তাহলে এই শব্দ দিয়ে গুগলে সার্চ দিলে ১.৬ কোটি সাইটের ফলাফল হাজির হবে। তাদের মধ্যে কয়েক হাজার জনপ্রিয় সাইট পাওয়া যাবে যেগুলোকে অতিক্রম করে প্রথম পাতায় আসাটা প্রায় অসম্ভব। সেক্ষেত্রে ওয়েবসাইটের ভিজিটর সংখ্যা কমে আসবে। কিওয়ার্ড নিয়ে গবেষনার জন্য সবচেয়ে ভালো সাইট হচ্ছে গুগলের নিজস্ব কিওয়ার্ড টুল। কিওয়ার্ড গবেষনা নিয়ে আমরা সামনে পর্বে আলোচনা করবো।

Search Engine Optimization Bangla Tutorial

অন পেজ অপটিমাইজেশনঃ

সাইটের জন্য সঠিক কিওয়ার্ড বাছাইয়ের পর এর বিভিন্ন অংশে এই কিওয়ার্টির ব্যবহার বা প্রতিফলন থাকতে হয়। প্রথমত ওয়েবসাইটের ডোমেইন নামে যদি বাছাইকৃত কিওয়ার্ডটি থাকে তাহলে সবচেয়ে ভালো হয়। দ্বিতীয়ত HTML এর Title ট্যাগে কিওয়ার্ড থাকা উত্তম। সাইটের Title ট্যাগটি ঠিকভাবে সাজানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এই অংশটি একজন ব্যবহারকারী এবং এবং সার্চ ইঞ্জিনকে সেই পৃষ্টায় কি তথ্য রয়েছে তা নির্দেশ করে। তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ওয়েবসাইটের Description meta ট্যাগ। এর মাধ্যমে ওই পৃষ্ঠার সারমর্ম লেখা হয়, যা সার্চ ইঞ্জিনকে সঠিকভাবে সেই পৃষ্ঠা Indexing এ সহায়তা করে। এই ধরনের পদ্ধতিকে On Page Optimization বলা হয়।

পেজর‍্যাংকঃ

PageRank বা সংক্ষেপে PR হচ্ছে গুগল কর্তৃক ব্যবহৃত এক ধরনের লিংক এনালাইসিস এলগরিদম, যা দ্বারা একটি ওয়াবসাইট কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা নির্ধারন করা হয় এবং সার্চের ফলাফলে এটিকে প্রাধান্য দেয়া হয়। গুগলের কাছে যে ওয়েবসাইট যতটা গুরুত্বপূর্ণ তার পেজর‍্যাংক তত বেশী হয়ে থাকে এবং সার্চের ফলাফলে সেটি তত সামনের দিকে থাকার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। সর্বোচ্চ পেজর‍্যাঙ্ক হচ্ছে ১০ এবং সর্বনিম্ম ০ পেজর‍্যাংক। গুগল টুলবারের সাহায্যে একটি ওয়েবসাইটের পেজর‍্যাংক জানা যায়। টুলবারটি http://www.toolbar.google.com এই সাইট থেকে ডাউনলোড করা যাবে।

Search Engine Optimization Bangla Tutorial

ব্যাকলিংকঃ

ব্যাকলিংক (Backlink) লিংক হচ্ছে একটি সাইটের পেজর‍্যাংক বাড়ানোর মূল হাতিয়ার। একটি ওয়েবসাইটের কোন পৃষ্ঠায় যদি অন্য একটি সাইটের লিংক থাকে তাহলে দ্বিতীয় সাইটের জন্য এই লিংককে বলা হয় ব্যাকলিংক বা ইনকামিং লিংক। আর প্রথম সাইটের জন্য এই লিংকটি হচ্ছে আউটগোয়িং লিংক, অর্থাৎ এই লিংকে ক্লিক কর ব্যবহারকারী দ্বিতীয় সাইটে চলে যাবে। এইভাবে একটি ওয়েবসাইটের যত বেশী ব্যাকলিংক থাকবে সেই ওয়েবসাইটে ব্যবহারকারী আসার প্রবণতা অনেকাংশে বেড়ে যাবে। পাশাপাশি সার্চ ইঞ্জিনের রোবট প্রোগ্রাম সেই সাইটকে খুব সহজেই খুঁজে পাবে। ব্যাকলিংক বাড়ানোর অনেকগুলো পদ্ধতি রয়েছে। তার মধ্যে জনপ্রিয় কয়েকটি পদ্ধতি হচ্ছে,
  • লিংক বিনিময়ঃ এটি হচ্ছে ভালো পেজর‍্যাংক বিভিন্ন ওয়েবসাইটের সাথে নিজের ওয়েবসাইটের লিংক বিনিময়, অর্থাৎ অন্য ওয়েবসাইটের লিংক যোগ করা এবং সেই সাইটে নিজের ওয়েবসাইটের লিংক যোগ করানো। এজন্য সাধারণত বিভিন্ন ওয়েবসাইটের এডমিনদের সাথে যোগাযোগ করে তাদেরকে লিংক বিনিময়ের প্রস্তাব জানানো হয়। আবার লিংক আদান প্রদানের জন্য বিভিন্ন ওয়েবসাইট রয়েছে যেখানে লিংক বিনিময়ে আগ্রহী ওয়েবসাইটের ঠিকানা পাওয়া যায়।
  • ফোরামে পোস্ট করাঃ এই পদ্ধতিতে প্রথমে একটি ভালো পেজর‍্যাংক ফোরামের Signature এ নিজের ওয়েবসাইটের লিংক যোগ করতে হয়। তারপর সেই ফোরামে নতুন কোন পোষ্ট করলে বা অন্যের পোষ্টে মন্তব্য দিলে লিংকটি সেই পৃষ্ঠায় প্রদশিত হয়ে ব্যাকলিংক তৈরী হয়।
  • আর্টিকেল জমা দেওয়াঃ ইন্টারনেটে বিভিন্ন ওয়েবসাইট রয়েছে যেখানে নিজের সাইটের কোন লেখা সেই সাইটগুলোতে জমা দেয়া যায় এবং সেই লেখার মধ্যে প্রয়োজন অনুসারে নিজের সাইটের লিংক দিয়ে ব্যাকলিংক তৈরী করা যায়।
  • ডাইরেক্টরীতে জমা দেওয়াঃ বিভিন্ন ওয়েব ডাইরেক্টরী রয়েছে যেখানে বিনামুল্যে নিজের সাইটের তথ্য এবং লিংক জমা দেওয়া যায়।
  • অন্যের ব্লগে মন্তব্য দেওয়াঃ অন্যের ব্লগে মন্তব্য দিয়ে এবং সাথে নিজের সাইটের লিংক যুক্ত করেও ব্যাকলিংক বাড়ানো যায়।

আজ এপর্যন্তই এসইও নিয়ে আরো বিস্তারিত কথা হবে সামনের পর্বে। সে পযর্ন্ত সবাই আমাদের সাথে থাকুন পাশে থাকুন। ধন্যবাদ সবাইকে।

লেখকঃ জাকারিয়া চৌধুরী (ই-পৃথিবী)

0 comments: